এ্যাডেনিয়াম বীজ জার্মিনেশন | Adenium Seed Germination

এ্যাডেনিয়াম বীজ জার্মিনেশন করতে হলে বেশ কিছু তথ্য জানা খুবই জরুরী। জার্মিনেশনের সময় ছত্রাকের আক্রমনে অনেক গাছ নষ্ট হয় যায়। কয়েক রকমে এ্যাডেনিয়াম বীজ জার্মিনেশন করা যায়। আমরা আস্তে আস্তে সব কিছু জানার চেষ্টা করব।
প্রথমত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে সফল অঙ্কুরোদগম নির্ভর করবে বীজের উপর। বীজ যদি তাজা ও নতুন সংগ্রহ হয়, তাহলে জার্মিনেশন রেট অনেক বেশি হবে। এমনকি ১০০%-ও জার্মিনেশন রেট পাওয়া যায়। তাই, বীজ নির্বাচন করতে অবশ্যই বিশ্বস্ত সেলারের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে।
এ্যাডেনিয়াম এর গাছ খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। কিন্তু, তার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোন কোন বীজ ১-২ দিনেই জার্মিনেশন হতে শুরু করে। আবার কিছু বীজ ৭-১০ দিনে জার্মিনেশন হয়।
এ্যারাবিকাম, থাই সোকাট্রানাম, সোমালেন্স বা মাল্টি-ফ্লোরাম জার্মিনেশনের জন্য একটু বেশি তাপ পছন্দ করে। এসব বীজ পাত্রের পরিবর্তে ট্রেতে জার্মিনেশন করে পরবর্তী সময়ে পাত্রে স্থানান্তর করতে হবে। সাধারন ওবেসাম এর মতো এগুলো একই পাত্রে রাখা উচিত হবে না।
এ্যাডেনিয়াম জার্মিনেশন এর জন্য কয়েকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
১) তাজা ও টাটকা বীজ
২) প্রচুর আলো ও বাতাস চলাচল ব্যবস্থা
৩) তাপ (২৫-৩০ ডিগ্রী সিলসিয়াস আদর্শ)
৪) আদ্রতা
৫) পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা
প্রথম ধাপঃ বীজকে রিহাইড্রেট করার জন্য কমপক্ষে 2-4 ঘন্টা হালকা (উষ্ঞ) গরম জলে বীজ ভিজিয়ে রাখুন। আমাদের পদ্ধতি হল এগুলিকে সারারাত ভিজিয়ে রাখা এবং পরের দিন সকালে রোপণ করা। হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ও পানি ১ঃ৪ বা ২ঃ৩ অনুপাতে মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
জার্মিনেশনের জন্য মোটাবালু, কোকোপিট, পাতাপচা সার/ভার্মিকম্পোস্ট, পার্ললাইট, দিয়ে মিডিয়া তৈরি করা যেতে পারে। অনেকেই অনেক রকম ভাবে মিডিয়া তৈরি করে। মিডিয়াতে যেন পানি না দাড়ায় এবং হালকা ময়েশ্চার থাকে, এমন মিডিয়া তৈরি করতে হবে।
দ্বিতীয় ধাপঃ ভেজানো বীজগুলো মিডিয়াতে ১-২ ইঞ্চি দূরত্বে রাখতে হবে। এবার উপরে হালকা একটা কোকোপিট এর লেয়ার দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। লেয়ারটি কোন ভাবেই মোটা হওয়া যাবে না। ১ সেন্টিমিটার হলে ভালো।
তৃতীয় ধাপঃ এবার সম্পুর্ন পাত্রে পর্যাপ্ত পরিমানে পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে। এরপর আর পানি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। শুধু খেয়াল রাখতে হবে, মিডিয়া যেন শুকিয়ে না যায় এবং পর্যাপ্ত পরিমানে পানি না থাকে। পানি শুকিয়ে গেলে স্প্রে করে ভিজিয়ে দিতে হবে।
চতুর্থ ধাপঃ বীজ ভালো জার্মিনেশনের জন্য ২৮-৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রাখলে খুবই ভালো জার্মিনেশন রেট পাওয়া যাবে। পর্যাপ্ত পরিমানে আলো না থাকলে কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করলে আরও ভালো। বীজ সম্পুর্নরূপে জার্মিনেট হয়ে গেলে ট্রে সম্পুর্ন সূর্যালোকে দিতে হবে।
পঞ্চম ধাপঃ চারাতে যখন ৩-৪ সেট পাতা দেখা যাবে, তখন তাদের রিপট করে দিতে হবে। এটা সাধারনত ১ মাসের মধ্যেই করতে পারবেন। রিপট করার সময় পর্যাপ্ত পরিমানে খাবারের ব্যবস্থা থাকতে হবে। প্রাকৃতিক খাদ্য যেন পর্যাপ্ত পরিমানে থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাসায়নিক সার বেশি ব্যবহার না করাই ভালো।
অনেকেই আবার টিস্যু পেপারে জার্মিনেশন করে পটিং করে।
এজন্য প্রথমে নির্বাচিত বীজগুলোকে ছত্রাকনাশক পানিতে ১ দিন ভিজিয়ে রাখতে হবে। বীজগুলো মোটা হয়ে গেলে ভেজা টিস্যু পেপারে ছিটিয়ে দিয়ে পাত্রে ঢেকে রাখতে হবে। ৬/৭ দিন পর সেগুলোকে পাত্রে লাগিয়ে দিতে হবে।
আবার, ভেজা বীজগুলোর খোসা ও পর্দা ছাড়িয়ে নিয়ে টিস্যু পেপারে রেখে দিয়ে পাত্র ঢেকে রাখতে হবে। ৭/৮ দিন পর সেগুলোকে পাত্রে লাগানো যেতে পারে।
বিঃদ্রঃ অভিজ্ঞরা অনেকেই অনেক রকম ভাবে জার্মিনেশন করে। এখানে বেসিক কয়েকটি পদ্ধতি আলোচনা করা হয়েছে।
আরও পড়তে পারেনঃ
ছত্রাক ও ছত্রাকনাশক নিয়ে কিছু তথ্য